কক্সবাজার, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

উখিয়ায় বনদস্যুদের হাত থেকে ৫ একর বনভূমি দখলমুক্ত করেছে বনবিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

কক্সবাজারের উখিয়ার খয়রাতী পাড়া এলাকার পাশ দিয়ে যাওয়া সড়ক ধরে কিছুদূর এগোলে চোখে পড়বে উঁচু পাহাড়ের ঢাল। ওই পথ ধরে যতদূর এগোনো যাবে, দেখা মিলবে বনবিভাগের বড় বড় গাছ কেটে ধ্বংসস্তূপের দৃশ্য। এর  কারণ একটাই বনদস্যুরা বনভূমি দখল করে ভোগ করতে ধ্বংসস্তূবে পরিনত করেছে।

২ বছর পূর্বে মানবাধিকার কর্মী ও বন উদ্যোগক্তা পরিচয়ে টেকনাফ হ্নীলা ইউনিয়নের নাইকংখালি এলাকার সিরাজ আহমেদের ছেলে বেলাল মোস্তফা দোছড়ি বিটের খয়রাতিপাড়ার মাহফুজের ঘোনা নামক এলাকায় স্থানীয় বনদস্যুদের সহায়তায় বনবিভাগের ৫ একর বনভূমি দখল করে। যা বনবিভাগে নজরে আসলে মঙ্গলবার ( ১৮ জুলাই ২০২৩) সকালে উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী মো: শফিউল আলমের নির্দেশে দোছড়ি বিট কর্মকর্তা রাকিব হোসাইন রাজুর নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে জবরদখলকৃত বনভূমি দখলমুক্ত করে বনায়নের কাজ শুরু করেন।

এসময় বিট কর্মকর্তা রাকিব বনদস্যুদের হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, বনভূমির জায়গা অবৈধ দখলদারের হাত থেকে রক্ষা করতে উখিয়া রেঞ্জ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে, তারই ধারাবাহিকতায় দোছরি বিটের আওতাধীন ৫ একর  বনভূমি দখলমুক্ত করে বনায়ন সৃজন করা হচ্ছে। আর যেখানেই বনভূমি দখল হবে সেখানেই উচ্ছেদ হবে। জবর দখলে জড়িত বনদস্যুদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দায়ের এর প্রস্তুতি চলছে। এবং এ উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে থাকবে বলেও জানান তিনি।

জানা যায়, কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন উখিয়া রেঞ্জের দৌছড়ি বিটের রাজাপালং মৌজার ১১০৫৭ দাগে টেকনাফ উপজেলার হৃীলা ইউনিয়নের নাইক্ষ্যংখালী গ্রামের সিরাজ আহমেদের পুত্র মো. বেলাল মোস্তাফা কর্তৃক জবর দখল ছিল। ইতোপূর্বে তার বিরুদ্ধে বন আইনের মামলা করা হয়েছে। যার মামলা নং: ১৬ দৌ/উখি ৫৯ অব ২০২১-২২

উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম বলেন, যারা বন বিভাগের জমি দখল করে জবরদখল করছে তাদের আমরা কঠোর হাতে প্রতিরোধ করবো। বনবিভাগের জমিতে অবৈধভাবে সংরক্ষিত বনাঞ্চল জবরদখলের দায়ে অভিযান চালিয়ে ৫ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে এবং এখানে আকাশ মনিসহ অন্যান্য জাতের ৫ হাজার চারা রোপণ করা হয়েছে। আকাশ মনি ছাড়াও জাম, চাপালিশ, আমলকি, বহেরা, হর্তকি, মেহগুনি গাছের চারা রোপন করছি।

তিনি আরও বলেন, সরকারি বনভূমি উদ্ধারে বনবিভাগ সচেষ্ট রয়েছে। লোকবল সংকটের কারণে অনেকসময় ইচ্ছে থাকার পরও সময় মতো অভিযান চালানো যায় না। কিন্তু দখলে অভিযুক্ত এলাকাগুলোতে এখন থেকে কঠিন নজরদারি রেখে নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। দখলদার যে-ই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইনের আওতায় আসবে তাদের সহযোগীও।

উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেন উখিয়া সদর বিট কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান সজল, ভালুকিয়া বিট কর্মকর্তা ছৈয়দ আলম, ওয়ালা বিট কর্মকর্তা এমদাদুল হাসান রনিসহ বনকর্মী ও সিপিজি সদস্যরা।

উল্লেখ্য: গেলো বছরের ১০ ডিসেম্বর উখিয়া রেঞ্জ একই জায়গায় অভিযান পরিচালনা করায় সেই বেলাল বন বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ মাধ্যমে বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালান। আর সে সময় বেলাল মোস্তফাকে বন আইনে একটি মামলা দেওয়া হয়।

পাঠকের মতামত: